নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ প্রকল্পকে পুঁজি করে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় দালাল চক্র বিদ্যুৎ সংযোগ গ্রহীতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার ২৪ ফেব্রæয়ারী দুপুরে পল্লী বিদ্যুতের চকরিয়া জোনাল অফিসের সামনে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের সৈকত পাড়ার প্রতারিত গ্রাহকরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে। এসময় তারা দালালদের বিরুদ্ধে চকরিয়া পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের এজিএম এর মাধ্যমে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
দালাল চক্রের মাধ্যমে টাকা আদায়ের অভিযোগে রোববার দুপুরে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড়ের সৈকত পাড়ার লোকজন পল্লী বিদ্যুতের চকরিয়া জোনাল অফিসের সামনে শতাধিক নারী পুরুষ অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। এসময় প্রায় ১ঘন্টা অবস্থান শেষে তারা চকরিয়া জোনাল অফিসের এজিএম এর মাধ্যমে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড়ের বাজার পাড়ার ইব্রাহিমের ছেলে আবু তাহের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে জনপ্রতি ৩ হাজার ৫শত টাকা করে দেড় লক্ষাধিক টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাত করেছে। তার দাবীকৃত সাড়ে ৩ হাজার টাকার মধ্যে কিছু টাকা বকেয়া রেখেছিল তাদের ওয়ারিং করা তার খুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে।
চকরিয়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে দালাল আবু তাহেরসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে আসা পেকুয়ার সৈকত পাড়ার মৃত শামশুল আলমের স্ত্রী মোহছেনা বেগম বলেন, দালাল চক্রটি তার কাছ থেকে সাইট খুঁটি দেয়ার নাম করে ১১ হাজার টাকা আদায় করেছে।
একই পাড়ার সেলিম উল্লাহ বলেন, তার মাধ্যমেও ওই পাড়া থেকে দালাল আবু তাহের ১লাখ ৬০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে। এ ভাবে সদর ইউনিয়নের বলির পাড়া, বিলাহাছুরা, টৈইটং, রাজাখালী,
মগনামা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে আগ্রহীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। সৈকত পাড়ার জয়নাল বলেন, খুঁটি স্থাপনের সময় বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে আগ্রহীদেরকে বিনা পারিশ্রমিকে খুঁটি পরিবহন ও স্থাপন কাজে শ্রম দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
অনুরুপভাবে চকরিয়ার বিদ্যুৎবিহীন ঘর ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্টানে মিটারসহ সংযোগ দিতে প্রভাবশালী দালালচক্র হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এভাবে চললে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত ২০১৯ সালের মধ্যে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
চকরিয়ায় একটি ঘরে মিটার দিতে দালালরা হাতিয়ে নিচ্ছে চার থেকে সাত হাজার টাকা এবং দোকানে মিটার দিতে নিচ্ছে দশ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অথচ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম বলেছেন ঘরে বিদ্যুৎ দিতে মিটার প্রতি ৪৫০টাকা ও দোকানে ৮শত টাকা দিতে হয়।
দালাল চক্র কর্তৃক টাকা হাতিয়ে নেয়ার ব্যাপারে চকরিয়া জোনাল অফিসের এজিএম শ্যামল কুমার মল্লিকের বলেন, দালাল চক্র কর্তৃক টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা আমি শুনেছি। তারপর এলাকায় মাইকিং করেছি, কেউ লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন না। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পেকুয়ায় আবু তাহের নামে পল্লী বিদ্যুতের কোন লোক নেই। ওই আবু তাহের আবার টাকা তুলতে গেলে তাকে বেঁধে রেখে পুলিশকে খবর দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এলাকাবাসি তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে নেয়া টাকা ফেরতসহ দালাল ও জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছেন।
তিনি আরো বলেন, চকরিয়া অফিস কেন্দ্রীক বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী দালাল রয়েছে। তাদের কিছু বলাও যায়না। এই দালালদের তাড়াতে হলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগীতা প্রয়োজন।
পাঠকের মতামত: